লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত: ১১:২৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ১২, ২০২৫

জবি উল্লাহ মাঈন:
কুমিল্লার লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলায় নবগঠিত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে স্থানীয় ছাত্রদলের ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীরা।

বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে কুমিল্লা প্রেসক্লাবের হলরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লাকসাম-মনোহরগঞ্জ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা নবগঠিত কমিটির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নেতারা জানান, ছাত্রদলের কমিটিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী, অছাত্র, বিবাহিত, গোশত ও মাছ বিক্রেতা, অটোরিকশা চালকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা দলীয় আদর্শ ও গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী।

গত ১০ মার্চ জাতীয় সংসদের ২৫৭, কুমিল্লা-৯ নিৰ্বাচনী এলাকার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গুরুত্বপূর্ণ চারটি সাংগঠনিক ইউনিট লাকসাম উপজেলা, পৌরসভা, মনোহরগঞ্জ উপজেলা ও নওয়াব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, ছাত্রদলের উল্লেখিত ইউনিট সমুহ কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের অধীনস্থ হলেও আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি জেলা ছাত্রদল এ বিষয়ে নুন্যতম অবগত নয়।পাশাপাশি ঘোষিত চারটি কমিটিতেই প্রয়োজনের অতিরিক্ত যুগ্ম-আহ্বায়ক রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই জুলাই বিপ্লবের আগে সক্রিয়ভাবে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল। আরো রয়েছে অছাত্র, বিবাহিত, গোন্ত বিক্রেতা, মাছ বিক্রেতা, অটো ড্রাইভার এবং প্রবাসীও! যা রীতিমতো পতিত মাফিয়া সরকার কর্তৃক লাকসাম-মনোহরগঞ্জ’র ছাত্রদলের নির‍্যাতিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের মর্মাহত করেছে! জুলাই বিপ্লবে রক্তক্ষয়ী গনঅভ্যুত্থানে খুনী হাসিনার অবৈধ সরকার পতনের আগে বৃহত্তর লাকসাম ছিল বাংলাদেশ থেকে একটি বিচ্ছিন্ন অঞ্চল। এখানে নুন্যতম আইনের শাসন ছিলো না! পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের অবৈধ মন্ত্রী ও এমপি তাজুল ইসলাম (প্রকাশ নাম চুঙ্গা ভাজু) এবং তার নিকটাত্মীরাই লাকসাম-মনোহরগঞ্জ’র অঘোষিত শাসক ছিল। তাদের হাতে লাকসাম-মনোহরগঞ্জ ছাত্রদলের শত শত নেতাকর্মী পৈশাচিক কায়দায় নির‍্যাতন নিপিড়নের শিকার হয়েছে।লাকসাম-মনোহরগঞ্জ ছাত্রদলের নির‍্যাতিত বৃহৎ অংশের কারোরই উল্লেখিত কমিটি গুলোতে সদস্য পদেও ঠাঁই হয়নি। কিন্তু, অতীতে মাফিয়া শাসকগোষ্ঠীর সাথে থেকে যারা আমাদের উপর নির‍্যাতন নিপিড়ন করেছে তাদের অনেকেই ৫ আগষ্ট-২০২৪ দুপুর ২টার পর হঠাৎ ছাত্রদলের নয়া ক’মী হয়ে সদ্য ঘোষিত উল্লেখিত চার ইউনিট কমিটিতে পদপদবী ভাগিয়ে নিয়েছে! যা আমরা শুধু আশ্চর্যই হইনি.. আমরা ম’মাহতও! এসব কমিটি নিয়ে কথা বলায় পতিত শাসকগোষ্ঠীর হাতে গতকাল নির্মমভাবে নির‍্যাতিত হয় মনোহরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের ত্যাগী কর্মী ওমর ফারুক জিসান! মনোহরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলে পদ ভাগিয়ে নেয়া নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হেলমেট পরিহিত সশস্ত্র একটি সন্ত্রাসী বাহিনী জিসানকে তার পোমগাঁ এর ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে একা পেয়ে জয়েন্ট পাইপ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। আহত জিসানকে তার স্বজনরা প্রথমে মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাকসাম জেনারেল হসপিটালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে জিসানের অবস্থা আশঙ্কাজনক! বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি লাকসাম-মনোহরগঞ্জ ছাত্রদলের উল্লেখিত কমিটি সমূহের আহ্বায়ক কমিটি গঠনে একটি বিশেষ সিন্ডিকেট মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের শীর্ষ নেতাদের মিথ্যা তথ্য এবং ভুল বুঝিয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী, অছাত্র, বিবাহিত, গোস্ত দোকানদার, মাছ দোকানদার এবং অটোরিকশার ড্রাইভার দিয়ে লাকসাম উপজেলা, পৌরসভা, মনোহরগঞ্জ উপজেলা ও নওয়াব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছে।আমরা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাংগঠনিক অবিভাবক, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের কাছে সবিনয়ে আকুল আবেদন জানাচ্ছি যে, অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে লাকসাম উপজেলা, লাকসাম পৌরসভা, মনোহরগঞ্জ উপজেলা ও নওয়াব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজ ছাত্রদল এর সদ্য ঘোষিত নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী, অছাত্র এবং বিবাহিতদের দিয়ে গঠিত কমিটি বিলুপ্ত করে আলোচনা সাপেক্ষে সকলের নিকট গ্রহনযোগ্য কমিটি গঠন করার জন্য ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলকে নির্দেশনা দিবেন।সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নজরুল ইসলাম- সভাপতি ৭নং ওয়ার্ড ছাত্রদল ফখরুল ইসলাম রাহাত – সদস্য নওয়াব ফয়জুন্নেছা কলেজ ছাত্রদল, আলমগীর হোসেন – সদস্য লাকসাম উপজেলা ছাত্রদল।রাকিবুল ইসলাম – যুগ্ম আহবায়ক, সুমাইয়া, ইমু, ইসান রাজিব, নাজিম কলেজ ছাত্রেদল নাহিয়ান তানবির যুগন সাধারন সম্পাদক ও সাকিব।