নিজস্ব প্রতিবেদক:
দু'দিন আগেই সেনা ও পুলিশের যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা, ফেন্সিডিল ও মাদক বিক্রির লক্ষাধিক নগদ টাকাসহ বৃদ্ধ পিতা, প্রতিবন্ধি ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী আটক হয়। দুদিন না পেরুতেই কুমিল্লা বুড়িচংয়ের ভারেল্লা উত্তর ইউপির পশ্চিমসিং গ্রামের চিহ্নিত মাদক কারবারি, ইয়াবার পাইকারী ডিলার আব্দুর রহমানের বাড়িতে ফের অভিযান পরিচালনা করে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। সোমবার (২৫ নভেম্বর) ভোর আনুমানিক ৬টায় ডিএনসি কুমিল্লা'র উপপরিচালক চৌধুরী ইমরুল হাসানের সার্বিক নির্দেশনায় ডিএনসির উপ পরিদর্শক তমাল মজুমদার সহ সঙ্গীয় ফোর্স অভিযান পরিচালনা করে। বুড়িচং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সনিয়া হক এর নেতৃত্বে দুই ঘন্টাব্যাপী মাদক কারবারি আব্দুর রহমান এর বসত ঘরসহ আশপাশে তল্লাশী চালানে হয়। এসময় বাড়ির উঠোনের পাশে সীমের মাচার বাঁশের খুটির ভেতরে সুকৌশলে লুকোনে ২হাজর ৮শত ২০পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। জানা যায় এরআগে গত শুক্রবার দেবিদ্বার সেনা ক্যাম্প ও থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৩ হাজার পিস ইয়াবা, ৭ বোতল ফেন্সিডিল ও মাদক বিক্রির লক্ষাধিক টাকা উদ্ধার করা হয়। মাদক কারবারি রহমান অভিযানের আগেই টের পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। তবে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয় বৃদ্ধ পিতা লতিফ মিয়া (৮৫), প্রতিবন্ধী ছোট ভাই সাদ্দাম হোসেন (৩০) ও ভাবি লুৎফা বেগম (২৫) গ্রেফতার করা হয়। পরে আটকৃতদের বিরুদ্ধে মাদক মামলা দায়ের শেষে পাঠানো হয় কারাগারে।
তবে এ ঘটনার দুদিন না পেরুতেই আবারো অভিযান পরিচালনাকরে মাদক উদ্ধারের পর একই স্থান থেকে ফের উদ্ধার হলো বিপুল পরিমাণ ইয়াবা।
তবে চতুর মাদক কারবারিদের শত কৌশলেও কুমিল্লা ডিএনসি সদস্যদের চোখ ফাঁকি দেয়া যেন দায়। গেল দু'দিন আগেই সেনা পুলিশসহ যৌথ বাহিনী চিরুনি অভিযান চালায় কুমিল্লা বুড়িচংয়ের এই মাদকের ডিলারের বাড়িতে।
সফল সে অভিযানে উপজেলার ভারেল্লা উত্তর ইউপির পশ্চিমসিংহ গ্রামের মাদকের ডিলার আব্দুর রহমানের বাড়ি থেকে প্রায় ১৩ হাজার পিস ইয়াবা, ফেন্সিডিল ও মাদক বিক্রির লক্ষাধিক নগদ টাকা সহ গ্রেফতার করা হয় তিনজনকে। তবে সেসময় অভিযান শুরুর আগেই টের পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় মরন নেশার পাইকারি ব্যবসায়ী রহমান। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত মাদকসহ আটক রহমানের বৃদ্ধ পিতা লতিফ মিয়া (৮৫), প্রতিবন্ধী ভাই সাদ্দাম হোসেন (৩০) ও ভাবি লুৎফা বেগম (২৫) মাদক মামলায় পাঠানো হয় কারাগারে।
চতুর মাদক কারবারি রহমান বাড়ির সামনে এবং তার বাড়িতে যাতায়তের বিভিন্ন সড়কের প্রবেশ পথে সার্বক্ষণিক পাহারার জন্য লোকজন নিয়োগ করে রাখেন। নিয়োগকৃত লোকজনের আগাম বার্তায় এবারো অভিযানের আগেই পালিয়ে যায় চতুর কারবারি রহমান। স্থানীয় এলাকাবাসী জানায় ভারত সীমান্ত এলাকা থেকে ইয়াবা, ফেন্সিডিল, মদ, গাজা সহ বিভিন্ন প্রকার মাদক এনে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাইকারি ভাবে সরবরাহ করেন। আব্দুর রহমানের মাদক ব্যবসা পরিচালনা ও সরবরাহের কাজে জড়িত রয়েছে অন্তত আরো ২০ জন। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে মাদকের টাকায় নারায়নগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় কিনেছেন বাড়ি, কুমিল্লা নগরীতে ফ্লাটসহ নিজ এলাকায় কিনেছেন একাধিক প্লট ও জমি। বিদেশে ইয়াবা পাচার করে মুলত ফুলেফেঁপে উঠছে মাদক কারবারি রহমান।
কুমিল্লা ডিএনসির অবৈধ মাদক বিরোধী বিশেষ এ অভিযানে বুড়িচং উপজেলা প্রশাসন ও আনসার সদস্যগন সার্বিক ভাবে সহায়তা করেন জানিয়ে ডিএনসির উপপরিচালক চৌধুরী ইমরুল হাসান বলেন, পলাতক মাদক কারবারি রহমান এর বিরুদ্ধে উপপরিদর্শক তমাল মজুমদার বাদি হয় বুড়িচং থানায় নিয়মিত মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তিনি আরো বলেন, মাদেকের আগ্রাসন বন্ধে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বদ্ধ পরিকর। মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অবৈধ মাদক ও মাদক কারবারিদের সম্পর্কে তথ্য দিয়ে সচতেন নাগরিকদের এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান তিনি।