সংস্কার ও বিচার কার্যক্রম শেষে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে- মিয়া গোলাম পরওয়ার

প্রকাশিত: ১১:৪৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৮, ২০২৫

জাফর আহমেদ:
দীর্ঘ ২৯ বছর পর লাকসামে ১৮ এপ্রিল সকাল ৮টায় লাকসাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে লাকসাম উপজেলা ও পৌরসভা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। লাকসাম পৌরসভা জামায়াতে ইসলামীর আমির মোঃ জয়নাল আবেদীন পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে ও লাকসাম পৌরসভা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মোঃ শহিদ উল্যাহ এবং লাকসাম উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী মোঃ জোবায়ের ফয়সালের যৌথ সঞ্চালনায় উক্ত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
এসময় তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর পর আমরা লাকসামে উম্মুক্ত পরিবেশে কর্মী সম্মেলন করতে পেরে মহান রবের দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। ২০২৪ সালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙ্গালী জাতি মুক্ত হয়ে ছিলো। আওয়ামীলীগ নির্বাচনের নামে বাঙ্গালী জাতির সাথে প্রহসন করেছে। ২০১৪ সালে নির্বাচন বিহীন, ২০১৮ সালে রাতে ভোট, ২০২৪ সালে আমি আর ড্যামি নাটকের মাধ্যমে বারবার ক্ষমতায় এসেছিলো আওয়ামীলীগ।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ সারাদেশে অসংখ্য নেতাকর্মীদের অন্যায় ভাবে হত্যা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্যাতনে অসহ্য হয়ে পুরো বাংলাদেশ একটি অগ্নিগর্ব হয়ে উঠেছিল।
সারা দেশের ওলামায়ে কেরাম ও ধর্মীয় অনুভূতিতে বিশ্বাসী লোকদের জেল, জুলুম দিয়ে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতার মসনদে স্থায়ী হতে চেয়েছিল। কিন্তু অন্যায়, জুলুম ও অত্যাচার করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারা যায় না। তিনি আরো বলেন, কুরআন এবং সুন্নাহর আইন ছাড়া মানব রচিত সংবিধান মানুষের কল্যাণ সাধিত করতে পারে না।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুরআন এবং সুন্নাহর আলোকে একটি কল্যাণকর রাস্ট্র গঠনে কাজ করে যাচ্ছে। এতেই জমিনে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষিত সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচার কার্যক্রম শেষ করে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়ার আহবান জানান তিনি। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যাপক ড. এ কে এম সৈয়দ সরওয়ার উদ্দিন সিদ্দিকী লাকসাম-মনোহরগঞ্জবাসীর জন্য ৭টি দাবী যথাক্রমে অবিলম্বে লাকসামকে জেলা ঘোষণা করা, নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করা, লাকসামে ৫০০ শয্যার একটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল করা, লাকসাম থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত নতুন রেলপথ স্থাপন করা, লাকসাম চৌদ্দগ্রাম সড়ক, লাকসাম মুদাফফরগঞ্জ সড়ক, লালমাই-চাঁদপুর সড়ককে চার লেনে উন্নীত করা, লাকসাম বাইপাস এবং বাগমারা বাজারের অবশিষ্ট দুই লেন সড়কের কাজ দ্রুত শেষ করা, অবিলম্বে কুমিল্লার বিমানবন্দরটি চালুর ব্যবস্থা করার দাবি জানালে প্রধান অতিথি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার তাঁর বক্তব্যে দাবীগুলো যৌক্তিক ও সময় উপযোগী বলে মন্তব্য করেন এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যখনি সুযোগ পাবে, তখনি দাবীগুলো পূরণ করবেন বলে জানান।
এছাড়াও তিনি লাকসাম-মনোহরগঞ্জ আসনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অধ্যাপক ড.এ কে এম সৈয়দ সরওয়ার উদ্দিন সিদ্দিকীকে দলীয় প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেন ও সকলের কাছে হাত উঠিয় পরিচয় করিয়ে দেন।
প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য আবদুর রব, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির এডভোকেট মো.শাহজাহান, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যাপক ড. এ কে এম সৈয়দ সরওয়ার উদ্দিন সিদ্দিকী, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মুহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি ডাঃ আবদুল মুবিন, মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, লাকসাম উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির হাফেজ জহিরুল ইসলাম, কুমিল্লা আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১এর পাবলিক প্রসিকিউটর এ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বদিউল আলম সুজন।
আরো বক্তব্য রাখেন, কুমিল্লা ইবনে তাইমিয়া স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল আলম হেলাল, সাবেক ভিপি অধ্যাপক রেজাউল করিম, জেলা জামায়াত নেতা সরওয়ার কামাল, মনোহরগঞ্জ উপজেলা জামায়াত মনোনীত উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হামিদুর রহমান সোহাগ, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মিজানুর রহমান, মনোহরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমির হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ নুরুন্নবী, নাঙ্গলকোট উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা জামাল উদ্দিন, লাকসামের গোবিন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বাশার, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি মহি উদ্দিন রনি প্রমুখ।